মাথার ওপর একঝাঁক শিমুলফুলের পাপড়ি
পাতায় ঝুলছে ভোর- শিশিরের সঙ্গে মিতালি পাতানোর তীব্র আকাঙ্ক্ষায়;
একটু বেঁকে, অপ্রতিরোধ্য মূর্চ্ছনায়
বিলিয়ে চলেছ অনাবিল স্নেহবর্তিকা
তা দেখে উল্লাস ছড়াতে ব্যস্ত মাধবিলতা।

ধ্যানমগ্ন ভোরে, ফুলপাপড়ির সমারোহে
কিংবা ফুলগন্ধের ঝামেলায় চেয়ে রয়েছ
তুমি যেন এক ধ্রুপদী মন্দির-
হাজার বছরের বনো পূজালয়
বাঙালির কৃষ্টির উত্তরাধুনিক ভিত।

মাঝেমধ্যে কালচে আর পীত রং
দেখা দেয় তোমার মুখমণ্ডলে কিংবা
ভগ্ন-অভগ্ন বাহুতে শ্যামল কিঞ্চিৎ।
তবুও রাতজাগা পাখি জানালায় উঁকি
মেরে ডেকে যায়, হাওয়াও সরব;
নড়ে উঠে পাতা, রবনিথর সরীসৃপ।

শিশিরের মতো সুখ আসে হৃদয়ে
মনিদুটিতে পাকা ধানের দানা
বাতাসের প্রবহমানতায় কান পেতে
চেয়ে থাকি, থাকবও হাজার বছর-
অপলকে, প্রিয় শহীদমিনার…

ভেতরে বাইরে এখনও চলে অসমাপ্ত
পরিশোধের কঠিন নীলচে অভিশাপ
মননদ্বাররুদ্ধ অস্তিত্বদংশনের বিরুদ্ধে
মুষ্ঠিবদ্ধ বিপ্লবমন্থন আর দ্রোহতান।

Share This Article
ড. মুকিদ চৌধুরী একাধারে বিজ্ঞানী, কবি, ঔপন্যাসিক, সাহিত্যিক, প্রাবন্ধিক, নাট্যকার। বাংলা সাহিত্যের প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই রয়েছে তাঁর সুদীপ্ত পদচারণা। তিনি বহুমাত্রিক লেখক। সকল রচনাই তাঁর কাছে গুরুত্বপূর্ণ। ফলে তিনি বাংলা সাহিত্যের প্রতিটি শাখায় পারদর্শিতা অর্জনে লিপ্ত। তিনি একাধারে সৃষ্টিশীল ও মননশীল লেখক। তাঁর সাহিত্য, ভাষা, বিজ্ঞান, সমাজ, রাষ্ট্র, বিশ্লেষণ যেমন সুপ্রশংসিত তেমনি কাব্য ও কথাসাহিত্যেও। এই দুটি শাখায় তাঁর শিল্পীসত্তা ও মননশীলসত্তা প্রকট। সাহিত্যজগতের বোদ্ধামহলে তাঁর ব্যাপক পরিচিতি, সাহিত্য-নাট্য-প্রবন্ধ-গবেষণা-বিজ্ঞানসম্পর্ক রচনার কারণে।