চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য জয়ে নন্দবংশ গেল ক্ষয়ে
এর চেয়ে বেশি যায় না জানা। নেই রাজা নেই তাই রে নানা
রাজা হল সমুদ্র গোপ দীর্ঘ শাসন তার পরে চুপ
প্রবলবেগে আসল যে হুন গুপ্ত রাজার মুখেতে চুন
শশাংক রাজ হটাতে হায়! সাত শতকের মাৎস্যান্যায়
পালেরা সব বৌদ্ধমতি শাসন জৌলস বেশ উন্নতি
তারপর হঠাৎ সামন্ত সেন বঙ্গ ভূমে দেখা যে দেন
লক্ষণ সেন তার-ই ধারা ইখতিয়ারে করলো তাড়া
তারপর এলো মোঘল পাঠান দ্বন্দ্ব কি তার হয় অবসান?
বারভূঁইয়ার ঈশাখাঁয় বাংলা তাঁরা স্বাধীন চায়
মানসিংহ যে করলো সন্ধি ভয়ংকর সেই প্রতিদ্বন্দ্বী
আকবর দিল গলায় মালা উপাধিটা মসনদআলা
তারপর হঠাৎ ছন্নছাড়া মসনদআলা গেলেন মারা
তিনশ বছর খুব বেশি নয় সবার তখন বর্গীর-ই ভয়
আলীবর্দী-বর্গী গেল ঠিকপেছনেই ইংরেজ এলো
পলাশিতে সিরাজদৌল্লা মীরজাফরের দারুণ হল্লা
মীরমদন ও মোহনলালে দেশের হয়ে রক্ত ঢালে
তারপরে তো সবার জানা ইংরেজেদের কঠোর হানা
নীলকর এলো ভয় দেখালো পাঞ্জাব জুড়ে কে শেখালো
বোন হারালো ঝাঁসি। মঙ্গল পা-ের জীবন গেলো
খুদিরামের ফাঁসি।
তিতুমীর ও সূর্যসেনে বেনিয়াদের নেয়নি মেনে
নূরুলদীন ও প্রীতিলতা আত্মত্যাগের কত কথা
দুশবছর গোলামিতে কত দুঃখ বইছে চিতে
তারপরে হায় বাঁধন টুটে দেশ বিভাগের হুজুগ উঠে
বাংলা হলো ভাগ
কলকাতা নেই কেবল ঢাকা বাংলা আমার ভীষণ ফাঁকা
হৃদয় জুড়ে বেজায় ক্ষোভ ও রাগ।
পাকিস্তানের নতুন জেলে এক হাজার মাইল দূরে ফেলে
স্বৈরাচারি শাসন-শোষণ দেশি দালাল করলো তোষণ
ভূতের মতন ধরল ঠেসে বাঙালিদের পিশলো এসে
ভাষার উপর আনলো আঘাত পূর্ব বাংলায় সেই প্রতিবাদ
অধিকারের জন্য লড়াই ভাষার দাবি রক্তে জড়াই
জব্বার-সালাম-রফিকেরা তারাই মহান তারাই সেরা
পৃথিবীতে এই সে জাতি যুদ্ধে যাবার তেলেসমাতি
অস্ত্র হাতে মুজিবসেনা বাড়ালো যে ঋণের দেনা
তিরিশলক্ষ শহিদ তাতে লাল সবুজের পতাকাতে
কতদিনের কষ্ট-ক্লেশে মাথাতুলে বাংলাদেশে
এখন এদেশ গড়বো যখন হানাদারদের দোসর তখন
স্বাধীন দেশে বসে বসে আবার দেখায় ভয়
কিন্তু তারা জানে খাঁটি, এই মাটি যে বীরের ঘাঁটি
গায় যে সবায় এক সুরে গান
হৃদয় খুলে ভৈরবীতান ‘জয় বাঙালির জয়’।